ইয়ারসাগুম্বা: নারী-পুরুষের যৌন সমস্যার আশ্চর্য সমাধান!

বর্তমানে নারী-পুরুষের যৌন সমস্যা একটি মহামারির আকার ধারণ করেছে। পৃথিবী জুড়েই এ সমস্যার পরিস্থিতি প্রায় একই রকম। কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও অধিকাংশ নারী-পুরুষ যৌনরোগে আক্রান্ত। প্রাচীন, আধুনিক কোনো চিকিৎসাই এ রোগের স্থায়ী কোনো সমাধানে কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারছে না।

সম্প্রতি এশিয়ান একটি ভেষজ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যৌনরোগী ও ডাক্তারদের কাছে। এশিয়ার বৃহত্তর পর্বত হিমালয়ে উৎপন্ন এ দুর্লভ ভেষজটি বিশ্বব্যাপী কদর পেতে শুরু করেছে। এর কার্যকারিতার ব্যাপারেও প্রশ্নাতীত ফলাফলের কথা বলছেন ব্যবহারকারীরা। সেই আশ্চর্য ভেষজটির নাম ইয়ারসাগুম্বা।

ইয়ারসাগুম্বা পরিচিতি

ইয়ারসাগুম্বা খুবই দুর্লভ ও ইউনিক একটি ওষুধি গাছ। পুরুষত্বহীনতা, অকাল মৃত্যু ও ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়। গাছটি ভুটান, নেপাল ও তিব্বতের হিমালয় অঞ্চলে খুবই অদ্ভুত পদ্ধতিতে উৎপন্ন হয়। ভেষজ এ গাছটিকে হিমালয়ান ভায়াগ্রা নামেও ডাকা হয়।

হিমালয় অঞ্চলে তিন থেকে চার হাজার মিটার উচ্চতায় পাহাড়ের ঢালে গাছটি উৎপন্ন হয়। পোকাসদৃশ মাশরুমটির বীজ বপন করতে হয় মাটির নিচে থাকা শুঁয়োপোকার মাথায়। পোকাগুলো মেরে সেখানেই পুঁতে রাখতে হয়। বীজটি ওই পোকাকে মমিতে পরিণত করে এর কীটগুলো মমির পুরো দেহে ছড়িয়ে পড়ে।

ইয়ারসাগুম্বা উৎপাদন

পাহাড়ে তুষারপাত ঘটলে মাটি ভেদ করে মমি হওয়া পোকাটির কপাল থেকে ওই ওষুধি গাছটি বের হয়ে আসে।

নেপাল ও তিব্বতের ওই অঞ্চলগুলো বেশ কিছু ওষুধি বৃক্ষের জন্য খুব জনপ্রিয়। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ইয়ারসাগুম্বার জন্য।

ইয়ারসাগুম্বা উৎপাদনের জন্য ওই অঞ্চলে অনেক ভূভাগ বরাদ্দ করা আছে। এ ভেষজটির উৎপাদন যেমন প্রচুর পরিমাণে হয়, তেমনি এর মূল্যও অনেক বেশি।

যেভাবে জনপ্রিয় ইয়ারসাগুম্বা

ইয়ারসাগুম্বাকে বিশ্বব্যাপী সর্বপ্রথম পরিচিত করেন জনপ্রিয় চায়না কোচ মা জুনিয়েন। ১৯৯০ সালে তার প্রশিক্ষিত এক নারী খেলোয়াড় এ ভেষজ ব্যবহারের মাধ্যমে রেকর্ড ভাঙা পারফরম্যান্স গড়ার পর এটির গুরুত্ব সামনে আসে।

জুনিয়েন তখন জানিয়েছিলেন, তার খেলোয়াড়দের প্রতিদিন তিনবার ইয়ারসাগুম্বা দেয়া দেয়া হতো। তারা এটা ব্যবহার করে উঁচু উঁচু টিলায় প্রশিক্ষণ নিত।

হিমালয় অঞ্চলে তুষারপাত শুরু হওয়ার পর ইয়ারসাগুম্বা গজাতে থাকে। এ মৌসুমে ওই অঞ্চলে হাজার হাজার শ্রমিককে ইয়ারসাগুম্বা তুলতে যেতে দেখা যায়। এর মাধ্যমে তারা বিপুল অর্থ উপার্জন করে থাকে। ইয়ারসাগুম্বা অনেকগুলো দুরারোগ্য ব্যাধির জন্য খুবই কার্যকর। তাই এটি দুর্লভ ও ব্যয়বহুল।

ইয়ারসাগুম্বার ব্যাপারে প্রাচীন চিকিৎসকদের মতামত

অনেক প্রাচীন চীনা পণ্ডিত বিভিন্ন দুরারোগ্য চিকিৎসার জন্য ইয়ারসাগুম্বার কথা উল্লেখ করে গেছেন। অবসাদ, ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা ইত্যাদি রোগের জন্য তারা এটিকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতেন।

তবে বিশ্বব্যাপী ইয়ারসাগুম্বার কদর বেড়েছে এটির কামোত্তেজক বৈশিষ্ট্যের কারণে। প্রাচীন চীনা ও তিব্বতি ভেষজবিদরা অপ্রতিরোধ্যভাবে যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইয়ারসাগুম্বার কার্যকারিতার কথা ঘোষণা করে গেছেন।

ঐতিহাসিক তিব্বতি চিকিৎসকরা দৃষ্টিশক্তি ও হ্যাপাটাইটিসের মতো রোগের জন্যও ইয়ারসাগুম্বা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে গেছেন।

ইয়ারসাগুম্বার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

১. এটি অবসাদ, ব্যথা ও মানসিক চাপ দূর করে।

২. ক্লান্তি কমায় এবং স্ট্যামিনা বা দেহের সহনশীলতা বৃদ্ধি করে।

৩.  কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।

৪. ফুসফুসকে সুস্থ ও সবল রাখে।

৫. নারী পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৬. পুরুষের বীর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং পুরুষত্বহীনতা দূর করে।

৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৮. দেহের মাংসপেশী মজবুত করে  এবং শারীরিক শক্তি বাড়ায়।

৯. কফের সঙ্গে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।

১০. অনুভূতিকে ভারসাম্যপূর্ণ করে একমুখী মনোযোগ বাড়ায়।

ইয়ারসাগুম্বা ব্যবহারবিধি

ইয়ারসাগুম্বা ব্যবহারের মাত্রা নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর। ডাক্তাররা একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য ০.৩ থেকে ০.৭ গ্রাম ইয়ারসাগুম্বা ব্যবহারের পরামর্শ দেন। ফলে ১টা বা ২টা নরমাল সাইজের ইয়ারসাগুম্বা তিনি ব্যবহার করতে পারেন।

যে কেউ একদম কাঁচা অবস্থায়ই ইয়ারসাগুম্বা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা এটিকে বিশ মিনিট পানি দিয়ে সেদ্ধ করেও খেতে পারেন। দুধের সঙ্গে ইয়ারসাগুম্বা পাউডার মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।

তিনদিন পরপর তিনদিন করে ইয়ারসাগুম্বা খেতে পারেন। এটা খাওয়ার সময় যদি কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি হয় তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এটি সেবন করলে এর কার্যকারিতা ও সুবিধা অনেক বেশি পরিমাণে লাভ করা যাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন